শিক্ষিত সন্তানদের চাকরি চান চা–শ্রমিকেরা, খেজুরীছড়া বাগানে একদিনের কর্মবিরতি

শিক্ষিত সন্তানদের চাকরি চান চা–শ্রমিকেরা, খেজুরীছড়া বাগানে একদিনের কর্মবিরতি

( বি এ এস এফ)

৪ মার্চ,২০২০ইংঃ শিক্ষিত চা–শ্রমিকদের সন্তানদের বাগানের উপযুক্ত পদে চাকরিসহ বিভিন্ন দাবিতে সিলেট বিভাগে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেছেন চা–শ্রমিকেরা। এতে শামিল হন শ্রমিকদের সন্তানেরাও। আজ মঙ্গলবার উপজেলার খেজুরীছড়া চা–বাগানে সকাল থেকে চা–বাগানের কাজ বন্ধ রেখে এই কর্মবিরতি করেন তাঁরা। খেজুরীছড়া ছাত্র ও যুব সংগঠনের ডাকে চা–বাগানের স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিকেরা কর্মবিরতিতে অংশ নেন। এই একদিনের কর্মবিরতীতে বাংলাদেশ এনার্কো-সিন্ডিক্যালিস্ট ফেডারেশন- বি এ এস এফ এর সদস্যগন অংশ গ্রহন করেন।

সরেজমিন দেখা যায়, চা–বাগানের স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিকেরা খেজুরীছড়া চা–কারখানার দরজার সামনে একজোট হয়ে আছেন। সেখানে চা–বাগানের শ্রমিকেরা তাঁদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে ধরেন। বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়।

খেজুরীছড়া ছাত্র ও যুব সংগঠনের সভাপতি ভাস্কর গোয়ালা বলেন, ‘চা–বাগানে বাবুদের চাকরির বয়স অতিবাহিত হলেও তাঁদের চুক্তির মাধ্যমে রাখা হয়। আমাদের চা–বাগানের শ্রমিকেরা অনেক স্বল্প মজুরিতে বাগানে চাকরি করেন। অনেক কষ্ট করে তাঁরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করান। চা–বাগানে এতগুলো পোস্ট থাকলেও তাদের সুযোগ দেওয়া হয় না।’

বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি করেছেন চা–শ্রমিকেরা। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের খেজুরীছড়া চা–বাগানের শিক্ষিত চা–শ্রমিকদের সন্তানদের বাগানের উপযুক্ত পদে চাকরিসহ বিভিন্ন দাবিতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেছেন চা–শ্রমিকেরা। এতে শামিল হন শ্রমিকদের সন্তানেরাও। আজ মঙ্গলবার উপজেলার খেজুরীছড়া চা–বাগানে সকাল থেকে চা–বাগানের কাজ বন্ধ রেখে এই কর্মবিরতি করেন তাঁরা। খেজুরীছড়া ছাত্র ও যুব সংগঠনের ডাকে চা–বাগানের স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিকেরা কর্মবিরতিতে অংশ নেন।

ভাস্কর বলেন, ‘আমাদের দাবি চা–বাগানে চুক্তির এই রাজনীতি বন্ধ করে চা–শ্রমিকদের শিক্ষিত সন্তাদের সেসব পদে চাকরি দেওয়া হোক। বহিরাগত নিয়োগ বন্ধ করা হোক। আমাদের দাবিগুলো আমরা ডিসি থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত পাঠিয়েছি, কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। আমাদের দাবিগুলো যদি না মানা হয়, তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনের ডাক দেব।’

চা–বাগানের শ্রমিক সুকচান বুনার্জি বলেন, ‘এত কষ্ট করে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করালাম। এখন তারা চাকরির জন্য বারবার চা–বাগানে আবেদন জানিয়েও পাচ্ছে না। আমাদের স্বপ্ন ছিল, ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে ভালো চাকরি পাবে। কিন্তু সেই স্বপ্নপূরণে চা–বাগান কর্তৃপক্ষ বারবার বাধা দিচ্ছে।’

রুহিনী দেশয়ারা নামের এক নারী চা–শ্রমিক বলেন, ‘চা–বাগানে শ্রমিকের কাজ আমাদের দিয়ে করানো হয়। আমাদের ছেলেমেয়েরা এখন শিক্ষিত হচ্ছে। যেহেতু চা–বাগানের সাথে আমাদের আত্মার সম্পর্ক হয়ে গেছে, আমাদের বাগানের বড় কাজগুলোতে আমাদের সন্তানেরা ভালোভাবে করতে পারবে। তাতে আমাদের সন্তানরা যেভাবে উপকৃত হবে, চা–বাগান কর্তৃপক্ষও উপকৃত হবে। আমাদের এই কথাগুলো আমরা বারবার বলার পরও কোনো কাজ হচ্ছে না। আমাদের বিভিন্ন আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে তারা। কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না।’

এ বিষয়ে এক আলোচনায় জানতে চাইলে খেজুরীছড়া চা–বাগানের ব্যবস্থাপক বলেন, ‘ দিন শেষে কর্মবিরতি থেকে শ্রমিকেরা উঠে গেছেন। তাঁরা যে দাবি নিয়ে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন, তা পুরোপুরি যৌক্তিক নয়। তারপরও আমরা তাঁদের নিয়ে একটি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছি। আগামী শনিবার তাঁদের নিয়ে আমরা বসব। আশা করছি সেখানে একটি সুন্দর সমাধান হবে।’

Language: 

Section: 

Content type: